Home » বাংলাদেশের জন্য কোন কোন দেশের ভিসা খোলা আছে

বাংলাদেশের জন্য কোন কোন দেশের ভিসা খোলা আছে

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে, তবে বিভিন্ন দেশের ভিসানীতিতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আসে। তাই বর্তমান সময়ে বাংলাদেশিদের জন্য কোন কোন দেশের ভিসা উন্মুক্ত রয়েছে, তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশ থেকে ভিসা ছাড়া, অন অ্যারাইভাল (VoA), ই-ভিসা এবং নিয়মিত ভিসার প্রয়োজনীয়তা সহ বিভিন্ন দেশের ভিসানীতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

ভিসার শ্রেণীবিভাগ

বিদেশ ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে। প্রধানত চারটি ক্যাটাগরিতে ভিসাগুলো ভাগ করা যায়:

  1. ভিসা ফ্রি – কোনো ভিসা প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র বৈধ পাসপোর্ট থাকলেই চলবে।
  2. অন-অ্যারাইভাল (VoA) ভিসা – নির্দিষ্ট দেশে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর বা নির্দিষ্ট প্রবেশপথে ভিসা প্রদান করা হয়।
  3. ই-ভিসা – অনলাইনে আবেদন করে নির্দিষ্ট অনুমোদনপ্রাপ্ত দেশ ভ্রমণ করা যায়।
  4. নিয়মিত ভিসা – নির্দিষ্ট দূতাবাসের মাধ্যমে আগেভাগে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।

বাংলাদেশ থেকে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে প্রবেশ করা যায়

বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা কিছু দেশে কোনো ধরনের ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারেন। সাধারণত এই সুবিধা নির্দিষ্ট সময়সীমার জন্য দেওয়া হয়। বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ফ্রি দেশসমূহ:

  • বাহামাস
  • বার্বাডোস
  • ভুটান
  • ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস
  • কুক আইল্যান্ডস
  • ডোমিনিকা
  • ফিজি
  • গাম্বিয়া
  • গ্রেনাডা
  • হাইতি
  • জামাইকা
  • কিরিবাতি
  • মাইক্রোনেশিয়া
  • মণ্টসের্যাট
  • রুয়ান্ডা
  • সেন্ট কিটস এবং নেভিস
  • সেন্ট ভিনসেন্ট এবং দ্য গ্রেনাডিনস
  • ট্রিনিদাদ এবং টোবাগো
  • ভানুয়াতু

বাংলাদেশ থেকে যেসব দেশে অন-অ্যারাইভাল (VoA) ভিসায় যাওয়া যাবে

অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উন্মুক্ত রয়েছে। ভিসার ফি এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র নির্দিষ্ট দেশের নিয়ম অনুযায়ী আলাদা হতে পারে।

  • বলিভিয়া
  • বুরুন্ডি
  • কম্বোডিয়া
  • কেপ ভার্দে
  • কোমোরোস
  • জিবুতি
  • গিনি-বিসাউ
  • মাদাগাস্কার
  • মালদ্বীপ
  • নেপাল
  • সামোয়া
  • সেশেলস
  • সিয়েরা লিওন
  • শ্রীলঙ্কা
  • তিমোর-লেস্তে
  • তুভালু

বাংলাদেশ থেকে ই-ভিসা নিয়ে যেসব দেশে প্রবেশ করা যায়

ই-ভিসা ব্যবস্থার ফলে এখন অনেক দেশ অনলাইনে ভিসা অনুমোদন দিয়ে থাকে। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ই-ভিসা প্রাপ্তি সহজ হওয়ায় এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

  • আলবেনিয়া
  • অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা
  • অস্ট্রেলিয়া
  • বাহরাইন
  • বেনিন
  • বটসওয়ানা
  • বুরকিনা ফাসো
  • ক্যামেরুন
  • কলম্বিয়া
  • কঙ্গো (ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক)
  • আইভরি কোস্ট (কোত দ’আইভোয়ার)
  • ইকুয়েডর
  • এল সালভাডর
  • ইকুয়াটোরিয়াল গিনি
  • ইথিওপিয়া
  • গ্যাবন
  • গিনি
  • হংকং
  • ইন্দোনেশিয়া
  • কজাখস্তান
  • কিরগিজস্তান
  • মালাওয়ি
  • মালয়েশিয়া
  • মোরিতানিয়া
  • মলদোভা
  • মোজাম্বিক
  • মিয়ানমার
  • নামিবিয়া
  • নাইজেরিয়া
  • ওমান
  • পাকিস্তান
  • কাতার
  • সাও তোমে এবং প্রিন্সিপে
  • সিঙ্গাপুর
  • দক্ষিণ কোরিয়া
  • দক্ষিণ সুদান
  • সেন্ট হেলেনা
  • সুরিনাম
  • সিরিয়া
  • তাজিকিস্তান
  • তানজানিয়া
  • টোগো
  • উগান্ডা
  • সংযুক্ত আরব আমিরাত
  • উজবেকিস্তান
  • ভিয়েতনাম
  • জাম্বিয়া
  • জিম্বাবুয়ে

বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত দেশে ভিসা নিয়ে প্রবেশ করতে হবে

অনেক দেশেই বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা বাধ্যতামূলক। এসব ক্ষেত্রে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিসা আবেদন করতে হয়।

দেশের নাম দেশের নাম দেশের নাম
আফগানিস্তান আলজেরিয়া আমেরিকান সামোয়া
আন্দোরা অ্যাঙ্গোলা অ্যাঙ্গুইল্লা
আর্জেন্টিনা আর্মেনিয়া আরুবা
অস্ট্রিয়া আজারবাইজান বেলারুস
বেলজিয়াম বেলিজ বারমুডা
বোনারে, সেন্ট ইউস্টেটিয়াস এবং সাবা বসনিয়া এবং হার্জেগোভিনা ব্রাজিল
ব্রুনেই বুলগেরিয়া কানাডা
কেম্যান আইল্যান্ডস কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র চাদ
চিলি চীন কঙ্গো
কোস্টা রিকা ক্রোয়েশিয়া কিউবা
কুরাসাও সাইপ্রাস চেক প্রজাতন্ত্র
ডেনমার্ক ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র মিশর
ইরিত্রিয়া এস্তোনিয়া এসওয়াতিনি
ফকল্যান্ড আইল্যান্ডস ফারো আইল্যান্ডস ফিনল্যান্ড
ফ্রান্স ফরাসী গায়ানা ফরাসী পলিনেশিয়া
ফরাসী পশ্চিম ইন্ডিজ জর্জিয়া জার্মানি
ঘানা জিব্রালটার গ্রীস
গ্রিনল্যান্ড গুয়াম গুয়াতেমালা
গায়ানা হন্ডুরাস হাঙ্গেরি
আইসল্যান্ড ভারত ইরান
ইরাক আয়ারল্যান্ড ইসরায়েল
ইতালি জাপান জর্ডান
কসোভো কুয়েত লাওস
লাটভিয়া লেবানন লেসোথো
লাইবেরিয়া লিবিয়া লিচেনস্টাইন
লিথুয়ানিয়া লাক্সেমবার্গ ম্যাকাও
মালি মাল্টা মার্শাল আইল্যান্ডস
মৌরিতানিয়া মায়োট মেক্সিকো
মনাকো মঙ্গোলিয়া মন্টেনেগ্রো
মরোক্কো নাউরু নেদারল্যান্ডস
নিউ ক্যালেডোনিয়া নিউ জ়িল্যান্ড নিকারাগুয়া
নাইজার নিউয়ে নরফোক আইল্যান্ড
উত্তর কোরিয়া উত্তর মেসিডোনিয়া নর্থার্ন মারিয়ানা আইল্যান্ডস
নরওয়ে পালাউ প্যালেস্টিনিয়ান টেরিটরি
পানামা পাপুয়া নিউ গিনি প্যারাগুয়ে
পেরু ফিলিপিন্স পোল্যান্ড
পর্তুগাল পুয়ের্তো রিকো রিইউনিয়ন
রোমানিয়া রাশিয়া সেন্ট লুসিয়া
সান মারিনো সৌদি আরব সেনেগাল
সার্বিয়া স্লোভাকিয়া স্লোভেনিয়া
সলোমন আইল্যান্ডস সোমালিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা
স্পেন সেন্ট মার্টেন সেন্ট পিয়েরে এবং মিকেলন
সুদান সুইডেন সুইজারল্যান্ড
তাইওয়ান থাইল্যান্ড টঙ্গা
তিউনিসিয়া তুরস্ক তুর্কমেনিস্তান
টার্কস এবং কাইকোস আইল্যান্ডস ইউক্রেন ইউনাইটেড কিংডম
ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা উরুগুয়ে ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস
ভ্যাটিকান সিটি ভেনেজুয়েলা ওয়ালিস এবং ফুতুনা
ইয়েমেন

কিভাবে বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশের ভিসা পাবেন?

বিদেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রাপ্তির প্রক্রিয়া দেশভেদে আলাদা হতে পারে। তবে সাধারণত নিচের ধাপে ভিসা আবেদন করতে হয়:

  1. সঠিক ভিসার ধরন নির্বাচন করুন: আপনি কী উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করছেন, তার ওপর নির্ভর করে ভিসার ধরন নির্ধারণ করুন।
  2. আবশ্যকীয় নথিপত্র সংগ্রহ করুন: ভিসা আবেদন ফর্ম, পাসপোর্ট, ছবি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ফ্লাইট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন, আমন্ত্রণপত্র (যদি প্রয়োজন হয়)।
  3. অনলাইন বা অফলাইন আবেদন করুন: অনেক দেশ এখন অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করে, আবার কিছু দেশে সরাসরি দূতাবাসে গিয়ে আবেদন করতে হয়।
  4. ভিসা ফি পরিশোধ করুন: প্রতিটি দেশের নির্দিষ্ট ভিসা ফি রয়েছে, যা সাধারণত অনলাইনে বা ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়।
  5. সাক্ষাৎকার ও বায়োমেট্রিক প্রদান করুন: কিছু দেশের ভিসা পাওয়ার জন্য দূতাবাসে গিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে হয়।
  6. ভিসা অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করুন: সাধারণত ৭-৩০ দিনের মধ্যে ভিসা প্রসেস সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলেও যেসব দেশ ভ্রমণ করতে আপনাকে ট্যুরিস্ট ভিসা নিতে হবে

বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের বেশিরভাগ দেশেই ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে যেতে হয়। জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • উত্তর আমেরিকা: যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো
  • ইউরোপ: যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, সুইজারল্যান্ড
  • এশিয়া: চীন, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড
  • দক্ষিণ আমেরিকা: আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি

উপসংহার

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সুযোগ থাকলেও ভিসানীতি পরিবর্তনশীল। তাই যেকোনো দেশে ভ্রমণের আগে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস বা অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ আপডেট জেনে নেওয়া উচিত। আশা করি, এই গাইডটি আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনায় সহায়ক হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top