Home » বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়
Bangladesh theke Italy jawar niyom

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। তবে প্রথমেই আপনার যে জিনিসটি লাগবে তা হলো একটি বৈধ ভিসা। কারণ ইতালি সরকার বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য কোনো On Arrival Visa প্রদান করে না।

তাই আপনাকে ভ্রমণের পূর্বেই ভিসার জন্য আবেদন ও একটি বৈধ ভিসা নিশ্চিত করতে হবে। তারপর জাহাজে অথবা বিমানের সাহায্যে ইতালিতে পৌঁছাতে পারেন। এছাড়া কাতার এয়ারওয়েজ, ইতিহাদ এয়ারওয়েজ, কুয়েত এয়ারওয়েজ ও এমিরেটস নিয়মিত বাংলাদেশ থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে।

ইতালি যাওয়ার সহজ উপায়:

ইতালিতে প্রবেশের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রচলিত আছে। যেমনঃ

  • ফ্যামিলি ভিসা ইত্যাদি।
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • ট্যুরিস্ট ভিস
  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  • মেডিকেল ভিসা

তবে এই ভিসা পাওয়াটাই সবচেয়ে কঠিন। টুরিস্ট ভিসা ও মেডিকেল ভিসা তে ইতালিতে যাওয়া তুলনামূলক সহজ হলে ও বেশিরভাগ মানুষই বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য বা উচ্চ শিক্ষার জন্য ইতালিতে যেতে চান।

ওয়ার্ক পারমিট অর্থাৎ কাজের ভিসায় ইতালিতে যাওয়ার উপায় :

ইতালি কাজের ভিসা পাওয়া সবচেয়ে বেশি কঠিন। অনেকেই কাজের ভিসার জন্য দালাল বা অনেক এজেন্সিতে ভিড় করেন। আপনারা অনেকেই জানেন মধ্যপ্রাচ্য বা অন্যান্য দেশগুলোতে এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করলেই কাজের ভিসা পাওয়া যায়।কিন্তু ইতালিতে এরকম এজেন্সির মাধ্যমে সরাসরি কাজের ভিসার জন্য আবেদন করা যায় না।

এক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে ইতালিতে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন শুধুমাত্র ওই দেশের কোনো বৈধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তারা।

অনেক অসাধু এজেন্সি ও দালালরা এই তথ্য গোপন করে প্রতারণা করে থাকে।

তাই ইতালির কাজের ভিসার জন্য আপনাকে ওই দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির প্রস্তাব পেতে হবে। ওই দেশের নিয়োগকর্তা আপনার নাম স্থানীয় প্রশাসনিক অফিসে Nulla Osta অর্থাৎ আপনাকে কাজে নিয়োগের জন্য ভিসার আবেদন করবেন।

নিয়োগকর্তার ওই প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়, অন্যান্য কাগজপত্র ঠিক থাকলে ইতালি সরকার কর্তৃক ওই ব্যক্তির নিকট আপনার নামের Nulla Osta পাঠানো হবে। পরে তিনি সেই Nulla Osta আপনার কাছে পাঠাবেন।

সেই Nulla Osta নিয়ে আপনি বাংলাদেশে অবস্থিত ইতালির দূতাবাসে বা VSF Global-এর অফিসে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।

তখন আপনার সকল কাগজপত্র ঠিক থাকলে ভিসা অফিস থেকে আপনাকে ভিসা দেওয়া হবে।

আপনি ইতালিতে যাবেন। তারপরে ওই প্রতিষ্ঠানের সাথেই কাজের চুক্তি সম্পাদন করে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবেন।

এভাবে আপনি ইতালির ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা পাবেন। ইতালিতে পৌঁছানোর পরে কাজের চুক্তি না করলে শুরু থেকেই অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবেন।

স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যাওয়ার উপায় :

প্রতি বছর কয়েক হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ইতালিতে উচ্চশিক্ষার জন্য যাচ্ছে। ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুণে মানে অনেক উন্নত। এছাড়া পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম কাজেরও সুযোগ রয়েছে। আর পড়াশোনা শেষ হলে সেখানেই কাজ করা ও নাগরিক হওয়ার সুবিধা রয়েছে।

  • স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যাওয়ার জন্য আপনাকে ওই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হবে।
  • ঐ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয় আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই করবে।
  • এবং আপনি ভর্তির জন্য নির্বাচিত হলে আপনাকে ঐ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি নিশ্চিতকরণ পত্র দেওয়া হবে।
  • তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ভর্তি নিশ্চিতকরণ পত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহকারে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
  • তাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় আপনার সকল ডকুমেন্টস সঠিক প্রমাণিত হলে আপনাকে স্টুডেন্ট ভিসা প্রদান করা হবে।

পর্যটন বা টুরিস্ট ভিসায় ইতালিতে যাওয়ার উপায়:

  • পর্যটন বা টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনাকে VSF Global এর ভিসা অফিসে অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম (সি টাইপ) পূরণ করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
  • এবং ভিসা অফিসে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন পাসপোর্ট, ফ্লাইট বুকিং, ভিসা ফি, ভ্রমণ বীমা, ভ্রমণের কারণ, রিটার্ন টিকিট বুকিং, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আমন্ত্রণপত্র (যদি থাকে), হোটেল রিজার্ভেশন ইত্যাদি জমা দিতে হবে।
  • তাদের যাচাই প্রক্রিয়ায় যোগ্য প্রমাণিত হলে ইতালি টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।
  • এই ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৯০ দিন হয়ে থাকে। এই সময়ের মধ্যে ইতালিতে কোনো কাজ করতে পারবেন না।

পারিবারিক বা ফ্যামিলি ভিসাতে ইতালি যাওয়ার উপায় :

  • প্রথমত এই ভিসা পাওয়ার জন্য ইতালিতে আপনার কোনো কাছের আত্মীয় বা পরিবারের কোনো সদস্যকে থাকতে হবে 
  • দ্বিতীয়ত তাদেরকে ইতালির বৈধ বাসিন্দা হতে হাতে হবে। 
  • তাহলে তারা পরিবার পুনর্মিলন ভিসার আবেদনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবে।  
  • এবং সর্বশেষে তাদের পক্ষ থেকে আপনার জন্য আবেদন করতে হবে এবং আপনাকে তাদের কাছে আমন্ত্রণ জানাতে হবে।  
  • এভাবে আপনি ইতালিতে ফ্যামিলি ভিসা পেতে পারেন।  

ইতালিতে কোন ভিসায় যাওয়া ভালো:

কাজের জন্য যদি ইতালিতে যেতে চান, তাহলে দুই ধরনের ভিসা পাওয়া যায়: সিজনাল ভিসানন-সিজনাল ভিসা। নন-সিজনাল ভিসা বেশি ব্যয়বহুল, তবে এই ভিসা দিয়ে দীর্ঘদিন ইতালিতে কাজ করা যায়। মেয়াদ সাধারণত দুই বছর, তবে পরবর্তীতে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া যায়।

অন্যদিকে, সিজনাল ভিসা সাধারণত কৃষি কাজের জন্যই হয়। এছাড়াও, রেস্টুরেন্টের কাজে কিছু নন-সিজনাল ভিসা দেখা যায়। এই ভিসার মেয়াদ ৯ মাস পর্যন্ত হয়। কিছু ক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ থাকে, তবে তার সংখ্যা নিতান্তই কম। মেয়াদ শেষ হলে, অর্থাৎ ৯ মাস পরে দেশে ফেরত আসতে হবে। তা না হলে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবেন।

অবৈধ অধিবাসী হয়ে ইতালিতে থাকলে কাজের সুযোগ কম পাবেন। কাজ পেলেও ইতালির বেতন কাঠামোর থেকে অনেক কম বেতন পাবেন। সাথে ধরা পড়ার ও দেশে ফেরত পাঠানোর ভয় তো আছেই।


আরো পড়ুন


আমাদের শেষ কথা:

প্রতি বছর অনেক মানুষ বিভিন্ন এজেন্সি ও দালালের মাধ্যমে অবৈধ পথে ইতালি বা ইউরোপের অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এই ধরনের পদ্ধতিতে ইতালি যাওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

প্রতিবছর ইউরোপে যাওয়ার আশায় ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারান। অন্যদিকে, আপনার যদি যোগ্যতা থাকে, তাহলে ইতালির কোনো প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী বা মালিকের সাথে কথা বলে আপনার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারেন। তাহলে তারা খুব সহজেই আপনার নামে Nulla osta ইস্যু করে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট বা ইতালিতে কাজ করার অনুমতিপত্র ও ভিসা দিতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top